রাজশাহী ওয়াসার অস্থায়ী (মাস্টাররোল) কর্মচারীদের স্থায়ী নিয়োগসহ ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে নগরীর উপশহরস্থ ওয়াসা ভবন সামনের সড়কে ওয়াসা কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে এক ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়। সকাল থেকেই কর্মচারীরা বিভিন্ন ব্যানার–প্ল্যাকার্ড ও শ্লোগান নিয়ে সমবেত হন। মানববন্ধন শেষে শান্তিপূর্ণভাবে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহী ওয়াসার বিপুল সংখ্যক কর্মচারী দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন। কেউ ১০ বছর, কেউ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে মাস্টাররোলে কাজ করলেও এখনো স্থায়ী করা হয়নি। অথচ হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে—সমপর্যায়ের সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে দৈনিকভিত্তিক কাজ করা কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ করতে হবে।
তাদের অভিযোগ, পানি সরবরাহ, পাইপলাইন মেরামত, জরুরি সেবা, ব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও অস্থায়ী কর্মচারীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের ‘উদাসীনতা’ দিন দিন বেড়েই চলেছে। একজন শ্রমিক প্রতিদিন ৮–১০ ঘণ্টা কাজ করলেও মাসশেষে হাতে পাওয়া বেতন দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।
বক্তারা জানান, মাস্টাররোল কর্মচারীদের দৈনিক মজুরি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকার মধ্যে। বর্তমান বাজারদর, চিকিৎসা ব্যয় ও সন্তানের শিক্ষার ব্যয় মেটাতে এই আয়ে টিকে থাকা ‘প্রায় অসম্ভব।’
সমাবেশে কর্মচারীরা শ্লোগান দেন—‘চাকরি নিয়ে তালবাহানা চলবে না’, ‘স্থায়ীকরণ চাই, বেতন বৃদ্ধি চাই’, ‘মৃত কর্মচারীর পরিবারের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে’, ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’। এসব শ্লোগানে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ, বঞ্চনা ও প্রত্যাশা ফুটে ওঠে।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী ওয়াসা কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সফিকুল আলম। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। বক্তব্য দেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন কাজল, উপদেষ্টা নাসিম খান, আজিজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জনি, প্রচার সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, আব্দুল মান্নান, বাবলা, বাকী বিল্লাহ, শাহাবুল ও মুলতানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের শতাধিক সদস্য এতে অংশ নেন।
সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ঘোষণা দেন, ‘আমরা কোনো অযৌক্তিক দাবি করছি না। হাইকোর্টের রায়ের আলোকে আমাদের স্থায়ীকরণের দাবি বাস্তবায়ন করা সরকারের দায়িত্ব। দাবি না মানা পর্যন্ত কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলন চলবে।’
তিনি আরও জানান, শিগগিরই বিভাগীয় কমিশনারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান এবং পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।
২৭/২, দূর্গাপুর, উপর রাজারামপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৬৩০০
২০২৫ © দৈনিক অধিকার কতৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত