ঢাকা ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
[gtranslate]
শিরোনামঃ
ভিডিও বানাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে কনটেন্ট ক্রিয়েটর শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে সৎ মা আটক- পলাতক বাবা লুট হওয়া জামায়াতের ৯ মোটরসাইকেল বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা রাজধানীর সচিবালয় মেট্রোরেল স্টেশনে ট্রেনের ছাদে দুই ব্যক্তি কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সিনিয়র সাংবাদিক জহির এনসিপির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হতে আর ‘দুই দিন’ সময় লাগতে পারে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেগম জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় যুব দলের দোয়া মাহফিল “স্বেচ্ছায় বিবাহ, তবুও  অপহরণ মামলা-নিরাপত্তা চেয়ে  ইসরাত খাতুন”র সংবাদ সম্মেলন ৮ দল আমাদের আর ৮ দল থাকছে না- আরও অনেক দল জোট করার আবেদন করছে- গোলাম পরওয়ার

দুর্নীতি-জালিয়াতির অভিযোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (এসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম হেল্থ পলিসি ওয়াচ। 

বাংলাদেশের পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তার নিয়োগ শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল।

অভিযোগ রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে শেখ হাসিনা অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মেয়েকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি ডাব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

তবে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে। গত মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। 

দুদকের উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম জানান, পুতুল তার মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় একাধিক ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত জাল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এটি বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারার আওতায় ‘জালিয়াতি’ ও ‘জাল দলিল ব্যবহারের’ শামিল। 

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়- বিএসএমএমইউ) সঙ্গে অনারারি সম্পৃক্ততার যে দাবি করেছেন, তা ভিত্তিহীন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। 

শুধু তাই নয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগে বলা হয়, পুতুল তার প্রভাব খাটিয়ে নিজের নেতৃত্বাধীন সুচনা ফাউন্ডেশনের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২.৮ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩০ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেন। এই অর্থের ব্যবহার নিয়ে রয়েছে অস্পষ্টতা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। 

এসব মামলার কারণে পুতুল বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ভেতরে ভ্রমণেও সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশে ফেরার পরিস্থিতিতে তিনি গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ডাব্লিউএইচওর মহাপরিচালক মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস এক অভ্যন্তরীণ ইমেইল বার্তায় সংস্থার কর্মীদের জানান, ১১ জুলাই থেকে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ছুটিতে যাচ্ছেন। তার অনুপস্থিতিতে সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথরিনা বোহমি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ১৫ জুলাই নয়াদিল্লিস্থ এসইএআরও কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। 

এখন পর্যন্ত ডাব্লিউএইচও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি বা পুতুলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু জানায়নি।

জনপ্রিয় সংবাদ

ভিডিও বানাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে কনটেন্ট ক্রিয়েটর

দুর্নীতি-জালিয়াতির অভিযোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটি

প্রকাশের সময়ঃ ০৯:৩৪:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (এসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম হেল্থ পলিসি ওয়াচ। 

বাংলাদেশের পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তার নিয়োগ শুরু থেকেই বিতর্কিত ছিল।

অভিযোগ রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে শেখ হাসিনা অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মেয়েকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি ডাব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

তবে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে। গত মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। 

দুদকের উপ-পরিচালক আখতারুল ইসলাম জানান, পুতুল তার মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় একাধিক ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা সংক্রান্ত জাল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এটি বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারার আওতায় ‘জালিয়াতি’ ও ‘জাল দলিল ব্যবহারের’ শামিল। 

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়- বিএসএমএমইউ) সঙ্গে অনারারি সম্পৃক্ততার যে দাবি করেছেন, তা ভিত্তিহীন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। 

শুধু তাই নয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগে বলা হয়, পুতুল তার প্রভাব খাটিয়ে নিজের নেতৃত্বাধীন সুচনা ফাউন্ডেশনের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২.৮ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩০ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেন। এই অর্থের ব্যবহার নিয়ে রয়েছে অস্পষ্টতা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে। 

এসব মামলার কারণে পুতুল বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ভেতরে ভ্রমণেও সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশে ফেরার পরিস্থিতিতে তিনি গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

ডাব্লিউএইচওর মহাপরিচালক মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস এক অভ্যন্তরীণ ইমেইল বার্তায় সংস্থার কর্মীদের জানান, ১১ জুলাই থেকে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ছুটিতে যাচ্ছেন। তার অনুপস্থিতিতে সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথরিনা বোহমি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ১৫ জুলাই নয়াদিল্লিস্থ এসইএআরও কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। 

এখন পর্যন্ত ডাব্লিউএইচও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি বা পুতুলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু জানায়নি।